আজকের ব্লগ পোষ্ট টি একটু ডিফারেন্ট, খেলা রিলেটেড- কাতারের কাতার বিশ্বকাপ যেভাবে আয়োজন করা হয়েছে যা আপনারা সবাই জানেন। আপনার মাথার মধ্যে কি আছে জানিনা কিন্তু আমার মাথার মধ্যে যেটা ঘুরপাক খাচ্ছে বা আমি যেটুকু দেখেছি, বুঝেছি পড়েছে, জেনেছি, সেটুকু হল এটা বিশাল রকমের একটা কর্মযজ্ঞ কাতার করতে পেরেছে ফাইনালি।
প্রথমবার কোন মুসলিম দেশ এককভাবে গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করতে পেরেছে। ইন্টারটেইনমেন্ট ব্যাপার- এটা আসলেই আমাদের জীবদ্দশায় আমরা দেখে গেলাম, এটা একটি বিরাট ব্যাপার যা ওরা সাধন করেছে। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী থেকে শুরু করে আপনাদের মনে থাকার কথা যখন উদ্বোধন হওয়ায় আলবাইক স্টেডিয়ামে পবিত্র কোরআনের বাণী দিয়ে শুরু হয়েছিল। ঘানিম আল মুফ্তা নামক একটা ছেলে, সেই ছেলে একটা প্রতিবন্ধী ছেলে যার কোমরের নিচের অংশ নেই, সেই ছেলে ফ্রিম্যান কে দিয়ে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ উদ্বোধন করা হয়েছিল।
ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ কাতার উদ্বোধনী ম্যাচ পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল। উদ্বোধনী ম্যাচ ফুটবলের ইতিহাসে আর কখনো এমনটা হয়নি, কাতার আগে থেকেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল যে আমরা আমাদের দেশের কালচার কে আমরা প্রচার করবো। সবাই তাই করে- ২০১৪ ব্রাজিল, ২০১৮ রাশিয়া করেছে,২০১০ যখন দক্ষিণ আফ্রিকা করেছে। এটা একটি সামান্য বিষয় কারণ যখন যার দেশে ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হয়েছিল তারা তাদের দেশের রীতি নীতি নিয়ম কানুন অনুযায়ী এই ফুটবল বিশ্বকাপ প্রচার-প্রচারণা করেছিল ঠিক তেমনি কাতার তার ব্যতিক্রম কিছুই করে নাই তবে মুসলিম দেশের কালচার পুরো বিশ্বকে দেখানোর জন্য জানানোর জন্য এই প্রচেষ্টা তারা করেছে এবং সেটা সফলভাবে করতে পেরেছে সম্পূর্ণ কাতারের বিশ্ব অর্থায়নে।
এখন আপনি বলতে পারেন কেন আমি কাতারের এই অনুষ্ঠান দেখে মুসলিমদেরকে আমি কেন ফোন করবো এক্সাম্পল হিসাবে আমি আপনাদেরকে বলতে পারি-আপনি বাংলাদেশের মার্কেটে গিয়ে,আপনি যদি ছেলে হন তাহলে বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য দেশের কোন একটি নায়কের ফলো করে থাকেন তাহলে সে যে পোশাক পড়েছে সেটা ভালো কি খারাপ সেটা আপনি গুরুত্বের সহিত না দেখলেও তার কোন একটি ভালোলাগা কাজ দেখে আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আপনি সেই ভালোলাগা থেকে তার পরা সেম ডিজাইনের একটি কাপড় আপনি কিনতে পারেন। আপনার দেশে যদি ভালো মানুষ থাকে কিন্তু আপনার কাছে ভালো লাগে না তাহলে সেই নায়ক বা মানুষের ড্রেস কিন্তু আপনি ক্রয় করবেন না ।
কাতার শুরুতেই বলেছে আমার দেশে মদ পান চলবে না, ওপেন মদ খাওয়া যাবে না, স্টেডিয়ামের মদ খাওয়া যাবে না, নারীরা ওপেন পোশাকে ঘুরে বেড়াতে পারবে না ।কাতারের প্রশাসনের করাকরি আইন দিয়ে বলে দেওয়া হয়েছে, কোনভাবেই কাতারের আইন ভঙ্গ করে এমন কোন কাজ কাতার গ্রহণ করবে না। খেলা দেখুন, খেলা কে ভালবাসুন আনন্দ উপভোগ করুন, তাতে কোন সমস্যা নেই তবে কাতারের কোন আইন লংঘন করা যাবে না।
কাতার মুসলিম দেশ কে পুরো বিশ্বকে জানানোর জন্য কাতারের পক্ষে যারা চেষ্টা ছিল সব তারা করার চেষ্টা করেছিল, ইসলামের ভালো ভালো কথা সেগুলা প্রজাতির জন্য ভালো সেগুলা কাতারে প্রবেশ করার সময় কাতারের এয়ারপোর্ট প্রতিটা বলে এমনকি রোডের সাইডে অলে ৬ টি ভাষায় ট্রান্সলেট করে লিখে রেখেছে যা দেখে সমগ্র বিশ্ব থেকে আগত মানুষ এটা দেখে এবং সেটা চিন্তারা অনুভব করতে পারে।
আমেরিকাতে সাধারণত কেউ কারোর গৃহে প্রবেশ করতে পারে না কারো অনুমতি ছাড়া, স্বজনপ্রীতি কি সেটা তারা জানেনা যেটা কাতারের মানুষ পুরো বিশ্বকে দেখিয়েছে। আপনি কাতারের বিভিন্ন পরিবারে যেতে পারেন, ফ্রি মাইন্ডে তাদের সাথে থাকা খাওয়া চলাফেরা করতে পারবে যেটা শুনে এমবি তাতে এটা সম্ভব না প্রফেশনাল ভাবে এটা মানতে রাজি নয়।
কাতারে যে শুধুমত্র মহিলাদের বিষয় পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে চলতে বলেছে এমনটা নয় পোশাকের স্বাধীনতা পুরুষদেরকে কেউ শালীনভাবে শালীন পোশাক পড়তে বলা হয়েছে, তারমানে এমনটা নয় জুব্বা পরে ঘুরতে হবে। এমনকি শোনা যাচ্ছে অনেক নারী-পুরুষেরা কাতারের এই সৌন্দর্য দেখে ইসলাম গ্রহণ করছে। অনেক মেয়েদের কাছ থেকে শোনা গেছে তারা কাতারে নির্ভয় দিনে রাতে ঘুরে চলছে পুরো টি শহর যেখানে তাদেরকে চোখে খারাপ ভাষায় তাদেরকে খারাপ ইঙ্গিত করা হচ্ছে না, পুরো এক মাস জুড়ে তারা সুন্দর একটি জীবন অনুভব করছে।
আমেরিকায় সাধারণত ৯৫% মানুষ মদ পান করে থাকেন, যখন শোনে কাতারে এসে মদ পান করা যাবে না সাধারণত তাদের কাছে অনেক বেশি খারাপ লেগেছিল, তবে কাতারে একদম যে মদ পাওয়া যাবে না এমনটি নয়, কাতারের প্রশাসনিক ভাবে কয়েকটি পার চালু রাখা হয়েছে তবে সেখানে ২১ বছরের কেউই মদ ক্রয় করতে পারবেনা। আর মদের দাম তুলনামূলকভাবে কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে যার ফলে কেউ বানায় সেগুলো দিতে না পারে। উত্তর আমেরিকায় সাধারণত শীতপ্রধান দেশে মদ পানের প্রচলন টা একটু বেশি।
ইতিমধ্যে অনেক আমেরিকান কাতারে এসে তারা বলেছে, আমরা মদ পান ছাড়া থাকতে পারি না তবে কাতারে এসে মদ পান না করেও দেশ সক্ষম হচ্ছি যা আমাদের ভাবনার বাইরে ছিল এবং কাতারের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছি। পশ্চিমা দেশের এমনও মানুষ আছে যারা ইসলাম কি ইসলাম ধর্ম টা কি সেটা কিছুই জানেনা। তবে ফুটবল খেলা দেখেন না এমন দেশ খুবই কমই আছে কাতারের অভিনব কায়দায় ইসলাম প্রচার করার জন্য যা যা করার তার করেছে এবং মুসলিম এবং ইসলামকে সেটা জানানোর চেষ্টা করেছে এবং বিশ্বের প্রতিটা দেশি ইসলাম সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে ধারণা করা হচ্ছে ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ এর মাধ্যমে।
ব্রাজিল ২০২২ সালে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের জন্য খরচ করেছিল ১৫ বিলিয়ন ডলার কিন্তু তার এবার খরচ করেছে ২২০ মিলিয়ন ডলার পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে বেশি এবং সর্বোচ্চ। আপনার কাছে কাতারের এই টাকা খরচ করে বিশ্বকাপ আয়োজন করার কতটুকু যুক্তিসম্মত আপনি মনে করেন সেটা কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।