গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ওয়াজ মাহফিল করতে এসে জনতার তোপের মুখে পড়েছেন ইসলামী বক্তা আবু তালহা আদনান। এসময় তিনি সহ তার তিন ব্যক্তিগত সহকারীকে অবরুদ্ধের ঘটনা ঘটে, তার সহকারীকে হেনস্তা করা হয়। শনিবার গোবিন্দগঞ্জে উপজেলার,কোচাশহর ইউনিয়নের এই ঘটনা ঘটে। সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় ওয়াজ মাহফিল ময়দানে বক্তা আবু ত্বাহ মোহাম্মদ আদনান এবং তার ৩ ব্যক্তিগত সহকারি মাওলানা শায়খ আব্দুল আলিম,মাওলানা মুজাহিদ এবং মাওলানা ফিরোজ কে ঘিরে রেখেছেন শ্রোতা এবং স্থানীয়রা।এরপর প্রায় আধাঘন্টা সময় ত্বাহার ব্যবহৃত মাইক্রোবাস সহ তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধরা। করেন মাওলানা মুজাহিদকে রাস্তায় টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় মুসল্লী, মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- শনিবার গোবিন্দ উপজেলার, কোচাশহর ইউনিয়নের, মুকুন্দ পুর জামে মসজিদের উদ্যোগে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এখানে পঞ্চাশ হাজার টাকা চুক্তিতে প্রধান বক্তা করা হয় আবু ত্বাহা মোহাম্মদ আদনান কে। গত ৮ নভেম্বর প্রথম দফায় ২০,০০০ টাকা নেন তাঁর ব্যক্তিগত সহকারীর মাওলানা শায়খ আব্দুল আলীম, বাকি টাকা ওয়াজ শেষে দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু হঠাৎ শনিবার সকালে শায়েক আব্দুল আলীম মসজিদ কমিটিতে জানান পুরো টাকা ছাড়া তারা ওয়াজে উপস্থিত থাকবেন না পরে বাধ্য হয়ে আরো ২০ হাজার টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠায় আয়োজক কমিটি।
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন জানান গত ৮ নভেম্বর আবু তহা আদনান এবং তার সহকারীর শায়খ আব্দুল আলীমের সঙ্গে মৌখিক চুক্তিবদ্ধ হয় আয়োজক কমিটির। সেখানে ওয়াজের মিনিমাম ৫০ হাজার টাকার চুক্তি হয়, ওয়াজ করতে হবে পুরো ২ ঘন্টা। সেদিন ২০,০০০ টাকা অগ্রিম নেন আবু ত্বাহ মোহাম্মদ আদনান, শনিবার সকালে দেওয়া হয় আরো ২০ হাজার টাকা। ওয়াজের মাঠে উপস্থিত হতে বাকি ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। বিকেল তিনটা থেকে পাঁচটা পর্যন্ত বক্তার ওয়াজ করার কথা ছিল কিন্তু তিনি পৌনে পাঁচটায় বক্তব্য শুরু করে ৫ঃ৩০ এ শেষ করে চলে যাচ্ছিলেন, এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন এবং শ্রোতারা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং আরও বক্তব্য দিতে বলেন আবু ত্বাহ মোহাম্মদ আদনান কে।
কিন্তু বগুড়ার সোনাতলী আরেকটি মাহফিল থাকায় তিনি অপারগতা জানান, এ সময় হঠাৎ তার সফরসঙ্গী তার তিন ব্যক্তিগত সহকারি স্থানীয়দের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের রোষানলে পড়েন তারা, তখন তার সহকারীর মাওলানা মুজাহিদ এক মুসল্লীকে বলেন ৫০,০০০ টাকায় আর কতক্ষণ বক্তব্য দিতে হবে। এই কথা বলার পর লোকজন তাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করেন, এসময় তাকে মারধরও করা হয়।
এ বিষয়ে মাহফিলের ক্যাশিয়ার সাখাওয়াত হোসেন বলেন এত টাকা তিনি দিয়েছেন অথচ 30 হাজার মানুষকে আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান ফাঁকি দিলেন। আধাঘন্টা বক্তব্য শোনার জন্য সকাল থেকে এতো মানুষ বসে ছিল তবে মাওলানা মুজাহিদ কে হেনস্থা এবং মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রচার কোচাশহর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, আবু তহা মুহাম্মদ আদনান তিনি নিজেই কথা রাখেনি তাই লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ছিল, চেয়ারম্যান জহুরুল হক আরো বলেন তিনি লোক পাঠিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেছেন। তবে আবু ত্বহা মোহাম্মদ আদনান এর সহকারি মাওলানা মুজাহিদ কে হেনস্থা এবং মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
উক্ত বাণীর সূত্র: jagonews24. com ফেসবুক পেজ ।