কাতার বিশ্বকাপে মেসি আর কি খেলা দেখাচ্ছেন? ইউরোপে তারচেয়ে বড় খেলা দেখাচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশ্বকাপের শোচনীয় পরাজয় বরণ করা জার্মানরা এবার কাঁপছে তীব্র শীতে কারণ তাদের উচিত শিক্ষা দিতে রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।এখন তীব্র শীত থেকে বাঁচতে আদিম যুগের লাকড়ির আগুনের শেষ ভরসা জার্মানদের। মানবাধিকার, সমকামিতা এবং ইউক্রেন যুদ্ধসহ সব বিষয়ে নাক গলানোর জার্মানদের এই পরিস্থিতি কিভাবে হল তা নিয়ে এবারের আয়োজন। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর অংশহিসেবে জার্মানরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও শিত আসলে পরিস্থিতি কি হবে সে চিন্তা করেনি জার্মানি। অথচ জার্মানি সহ নেটোর অধিকাংশ দেশ চলেই রাশিয়ার দেয়া জ্বালানি তেল, গ্যাস এর মাধ্যমে।
যুদ্ধ শুরুর পর এসব দেশে রাশিয়ার বিপক্ষে গিয়ে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিচ্ছে আর এর উপযুক্ত শাস্তি হিসেবে এখন তীব্র শীতের মধ্যে রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী জার্মানিতে জ্বালানি সংকটের কারণে এখন কাঠেয়ের চেয়ে গ্যাসের মূল্য ১৬ গুণ এবং তেলের মূল্য ১৩ গুণ বেশি কিন্তু এত টাকা খরচ করেও তেল গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় তারা বাধ্য হয়ে আদিম যুগে ফিরে গেছে। ইলেকট্রিক রুম হিটার ব্যবহারের সুযোগ নেই বিধায় প্রাচীন আমলের ফায়ারপ্লেসের কাঠ কয়লা জ্বালিয়ে এখন তারা শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। ইউরোপের কিছু মানুষ ব্যায়াম হিসেবে সাইকেল ব্যবহার করে থাকে কিন্তু এখন গ্যাস সংকটে প্রচুর মানুষ গাড়ি গ্যারেজে রেখে গণহারে সাইকেল ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে।
এদিকে কয়েকদিনের মধ্যে শিত আরও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে জানিয়েছে জার্মান আবহাওয়া অধিদপ্তর। এজেনো মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা, কয়েকদিন পর তীব্র তুষারপাতে শুরু হলে পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সে চিন্তা জার্মানরা এখনই আতঙ্কিত হয়ে আছে। আশন্ন তুষারপাতে সময়ে রাশিয়ান তেল-গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম বিধায় নাগরিকদেরকে জ্বালানি হিসাব করে ব্যবহারের জন্য সতর্ক করেছে জার্মান সরকার। এমনকি আন্তর্জাতিক মহলে কানাঘুষা চলছে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইউক্রে যুদ্ধের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান পুর্নবিবেচনার কথা ভাবছে জার্মান সরকার।
সিএনএন জানিয়েছে ফ্রান্সে প্রতি চারটি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে একটি স্টেশন গ্যাস সংকটে খালি পড়ে আছে, এসব দেশের রাজনীতিবিদরা রাশিয়ার সাথে টক্কর দিতে গিয়ে এখন জ্বালানির মূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার এতটাই বাইরে চলে গিয়েছে যে মানুষ প্রতিবাদী হয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। বিগত কিছুদিন যাবত জার্মানি ফ্রান্স সহ প্রভাবশালী ইউরোপীয় দেশগুলোতে নজিরবিহীন গণবিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এদিকে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে তীব্র জ্বালানি সংকটের কারণে জার্মানির বেশকিছু শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে যদিও পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো সচেতনভাবে এসব সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত রয়েছে।
সমালোচকরা উপহাস করে বলছেন ইউরোপের দেশগুলো মূলত এভাবেই পরের ধনে পোদ্দারি করে। কলোনি বানিয়ে রাখা আফ্রিকার দেশগুলো থেকে সম্পদ লুট করে সেই টাকা দিয়ে তারা রাশিয়া থেকে গ্যাস কিনে আনে সেই গ্যাস দিয়ে চলে তাদের বাড়িঘর থেকে কলকারখানায় গাড়ি-ঘোড়া সবকিছু ফলে কখনো যদি সৌদি রাশিয়ার মতো জ্বালানি শক্তিধর দেশগুলো তাদের সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তাহলে পশ্চিমাদের পরিণতি কী হবে তার ছোটখাটো একটা ট্রায়াল এখনকার তীব্র শীতে ফ্রান্স-জার্মানিতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে কাতার বিশ্বকাপে মুখে হাত দিয়ে ছবি তোলা জার্মানরা এখন খেলা ও রাজনীতির উভয় অঙ্গনে এমন বেকায়দায় পড়েছে যে বাস্তবে এখন তাদের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন তারা না পারছে খেলা নিয়ে উপহাস এর জবাব দিতে আর না পারছে তীব্র শীতে নিজের নাগরিকদের জন্য একটু উষ্ণতার ব্যবস্থা করতে।